বটু কৃষ্ণ হালদার
সমগ্র পৃথিবীতে যে কোন দেশের রেল পরিবহণ ব্যবস্থা অর্থনৈতিক, সামাজিক, ও সংস্কৃতি ঐক্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও শ্রেষ্ঠ ভূমিকা পালন করে তা অনস্বীকার্য. সর্বত্র রেল পরিবহণ রেল পথ হিসাবে স্বীকৃতি. বর্তমান সমাজ ও সময়ের প্রেক্ষাপটে বঙ্গ লক্ষ্মীর শাখা প্রশাখায় আজ এই পরিবহণ ব্যবস্থা ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে ।
জনসাধারণের কাছে এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিবহণ ব্যবস্থার নাম হল রেল পথ. স্বল্প ব্যায় ও অতি দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে অবিচল এই পরিবহণ ব্যবস্থা. সরকার ও কর্মচারী রা সর্বদা এই পরিষেবায় নিরন্তর ও অক্লান্ত পরিশ্রম করে. এই পরিবহণ ব্যবহারকারীর সুরক্ষায় ঝড়, জল, প্রচন্ড শীত ও ব্যক্তিগত পারিবারিক নিরাপত্তা কে উপেক্ষা করে দিনরাত এক করে যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেন
তারা হলেন রেল পথ রক্ষণাবেক্ষণকারী "TRACK MAINTENANCE ও SUPERVISOR" রা. সর্বোপরি রেল পরিষেবা কে ভারতের দ্বিতীয় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী বললেও হয় তো কম কিছু বলা হবে না. যে সেবায় দিবl, নিশি, ঝড়, জল, রোদে, প্রচন্ড শীতে জনগণ নিশ্চিত ভাবে পার হয়ে যান মাইল এর পর মাইল,
তখন এই রেল পথ সুরক্ষা কর্মীরা সব কিছু উপেক্ষা করে অতন্দ্র প্রহরায় নিজেদের জীবনকে বাজী রেখে সেই পথ কে সুরক্ষিত করার চেষ্টায় অবিচল থাকে. কিন্তু সেই কর্মীরা আজও অবাঞ্ছিত, লাঞ্ছিত, উপেক্ষিত প্রতি পদে সমস্ত উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা তথা নিজ ডিপার্টমেন্ট এর অফিসসার দের থেকে ।
ভারতীয় রেল পথ ব্যবস্থা হল জাতীয় অর্থনীতির মেরুদন্ড. সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এই সেবা দূষণ মুক্ত মাধ্যম. অন্তরদেশীয় বহুমুখী সামাজিক দায়িত্ব পালন করেন এবং কর্মসংস্থানের বৃহত্তম কেন্দ্রস্থল. সর্বোপরি জাতীয় ঐক্য ও কর্মসংস্থানের মধ্যমণি হিসাবে বিরাজ করে এই রেল পরিষেবা.
এই সেবা যতো উন্নতির পথে তাতোটাই জনগণ তথা ব্যবসায়ী গন ও বড় বড় কোম্পানি তারা সময় মত জিনিস পত্র আদান প্রদান করতে পারেন. পর্যটন কেন্দ্রে এসেছে এক অভিনব জোয়ার. সময়ে তারা বিভিন্ন প্রান্তের বিপজ্জনক স্থানের বেড়াতে যাবার ইচ্ছা গুলো ভ্রমন পিপাসু মানুষদের গভীর অণুসন্ধিসা গুলি মিটিয়ে দিয়েছে.
বর্তমান ভারতীয় সমাজের লাইফ লাইন এই রেল আজ ধ্বংসের মুখে. কেন্দ্রীয় সরকার অর্থনৈতিক সংকটের অজুহাত দিয়ে রেল পরিবহণ ব্যবস্থা কে ঠেলে দিচ্ছে বেসরকারি করনের পথে. আবার রেল ব্যবস্থার অবনতির অন্যতম কারণ হল সরকারের সাথে সাথে জনসাধারণের উদাসীনতার অভাব.
সমাজ সচেতন নাগরিক হিসাবে আমাদের ও কিছু দায় দায়িত্ব থাকে কিছু নিয়ম পালনের জন্যে কিন্তু আমরা তা পালন করি না. রেল এর কামরার মধ্যে তাস খেলা. ধূমপান করা, মদ্যপান করা, ব্যাগ রেখে জায়গা দখল, ধর্ষণ, মতো বেআইনি ঘটনা গুলো ঘটে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে সুস্থ সাধারণ জনগণ নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন. রেল ব্যবস্থা হোল ভারত সরকারের রেল মন্ত্রকের বিভাগীয় সংস্থা. রেল পথ লোকমোটিভ শিল্প ।
সদর দপ্তর নতুন দিল্লী. এটি ভারতীয় জন জাতির জীবন রেখা. ভারতীয় রেল বিশ্বের বৃহত্তম ও ব্যস্ততম পরিবহন গুলির মধ্যে অন্যতম. প্রতিদিন প্রায় এক কোটি আশি লাখের বেশি যাত্রী ও তিনশ কুড়ি লক্ষ টনের বেশি পণ্য চলা চল করে. কর্মচারীর সংখ্যা আনুমানিক প্রায় বারো লাখ ।
দেশের সামগ্রিক দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর রেলওয়ে ব্যবস্থা প্রসারিত. রেল পথের মোট দৈর্ঘ্য তেষট্রি হাজার তিনশ সাতাশ কিলোমিটারের ও বেশি. Roling stock হিসাবে ভারতীয় রেল কুড়ি হাজার এর ও বেশি (পণ্য) ওয়াগন, পঞ্চাশ হাজার এর বেশি কোচ, ও আট হাজার এর বেশি লোকোমোটিভের মালিক ।
ভারতে প্রথম রেল পথ তৈরির প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় 1832 সালে. এর পর 1853 সালে লর্ড dalhousie র আমলে প্রায় 34 কিলোমিটার প্রথম রেল যাত্রা শুরু করেন মাত্র চারশো জন যাত্রী নিয়ে স্বাধীনতার পূর্বে 1853 সালে ব্রিটিশ সরকার আপন স্বার্থে এই রেল ব্যবস্থা চালু করেন ।
বুঝেছিলেন এই দেশে রাজত্ব করতে গেলে অস্ত্র.,বোমা. সৈনিক, নিরাপত্তার যন্ত্রপাতি মজুত করতে এবং এই দেশর সম্পদ আপন দেশে রপ্তানি করার জন্য অতি দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থার দরকার."DAPOORIE VIADUCT" হল ভারতের প্রথম রেল ব্রিজ 1854 সালে নির্মিত হয়েছিল বোম্বাবাই থেকে থানে পর্যন্ত. প্রথম বৈদ্যুতিক রেল চলাচল শুরু হয় 3rd ফেব্রুয়ারি 1935 সালে প্রায় 9.5 মেইল পথে বোম্বাবাইয়ের ভিক্টোরিয়া টার্মিনাল থেকে কুড়লা পর্যন্ত পথে.
রেল ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর ব্রিটিশ দের কাছে ছিল আশীর্বাদ কিন্তু ভারতীয় দের কাছে ছিল অভিশাপ. ব্রিটিশ রা সর্বদা এটির রক্ষণাবেক্ষণ করা ও উন্নীত করনের চেষ্টায় সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন কিন্তু আমরা ভারতীয় রা তা ধ্বংসের জন্যে তৈরি থাকতাম. তার প্রমাণ স্বরূপ 1930 সালে মাস্টার দা সূর্য সেন এর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রlগার লুণ্ঠন এর ইতিহাস আমরা সবাই জানি, তিনি তার সঙ্গী দের নিয়ে রেলপথ তছনছ করে দেন. কিন্তু স্বাধীনতার পরে এই রেল পরিবহণ দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে.
0 Comments